তাহিরপুর; সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া জয়বাংলা বাজারে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন (পাগল) নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা তিন দিন আগে, গভীর রাতে ওই বাজার এলাকার একটি রাজনৈতিক দলের অফিস ঘরে ঘটে বলে স্থানীয়রা জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘটনার রাতে সন্দেহজনক আচরণ দেখে স্থানীয় কয়েকজন যুবক অভিযুক্তদের মধ্যে তিন’জনকে হাতেনাতে আটক করেন। আটককৃতদের মধ্যে একজন বড়ছড়া গ্রামের কমল দাসের ছেলে রনজিত (২২), অপরজন আনু মিয়ার ছেলে আওয়াল মিয়া (২৬)। বাকিদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
পরে বিষয়টি স্থানীয় বাজার কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়। কমিটির আহ্বানে সাড়া না দিলেও, স্থানীয়দের সহায়তায় ২৭ জুলাই (রবিবার) সন্ধ্যায় দু’জন অভিযুক্তকে ধরে বাজার কমিটির সামনে হাজির করা হয় এবং একটি ‘স্থানীয় সালিশি বিচার’ অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এই ঘটনায় জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুকে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন— ধর্ষণের মতো গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের বিচার বাজার কমিটি কীভাবে করে?
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ধর্ষণ একটি শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ, যার তদন্ত ও বিচার সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। দণ্ডবিধি অনুযায়ী, প্রমাণিত ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, "এ বিষয়ে থানায় কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি আপনারা জানিয়েছেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
অন্যদিকে বাজার কমিটির সভাপতি জানান, "আমরা স্থানীয়ভাবে একটি সালিশের মাধ্যমে অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছি। ধর্ষণের বিষয়ে কেউ নিশ্চিত তথ্য বা প্রমাণ দিতে পারেনি। তাই আমরা আইনি পদক্ষেপে যাইনি।
এদিকে ভুক্তভোগী নারীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা, অবস্থান ও নিরাপত্তা নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে তার চিকিৎসা, সুরক্ষা এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক রাষ্ট্রীয় আইনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক এবং এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেজন্য প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ।
মন্তব্য করুন