ইরান ও ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সব সীমান্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। সোমবার পাকিস্তানের প্রাদেশিক কর্মকর্তারা ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কাদির বখশ পিরকানি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে পাকিস্তানের চাঘি, ওয়াশুক, পানজগুর, কেচ ও গোওয়াদার জেলার সীমান্ত কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।চাঘি জেলার সীমান্ত চৌকির কর্মকর্তা আত্তা উল মুনিম বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইরানে প্রবেশ স্থগিত করা হয়েছে। তবে সীমান্তে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই এবং ইরানে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকরা প্রয়োজনে দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আত্তা বলেন, আজ প্রায় ২০০ জন পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ফিরতে পারে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
এর আগে, রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছিলেন, ইরান থেকে ৪৫০ জন পাকিস্তানিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং আরও অনেককে ফেরানো হবে।
বিশ্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তান। শুক্রবার দেশটি বলেছে, ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে তারা ইরানের সরকার ও জনগণের পাশে রয়েছে। ইরান এবং পাকিস্তান— উভয় দেশই ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।
সোমবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, বিশ্বকে ইসরাইলের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে সতর্ক ও উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। ইসরাইল আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নিয়ম-নীতির কোনও তোয়াক্কা করে না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার না করলেও মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ইসরাইলকে বিবেচনা করা হয়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সংঘাত আরও বিস্তার ঘটলে তেহরানকে সমর্থন জানাতে পারে পাকিস্তান। তবে ইসলামাবাদের কর্মকর্তারা বার বার বলেছেন, ইরানের প্রতি পাকিস্তান কেবল ‘নৈতিক ও কূটনৈতিক সংহতি’ জানিয়েছে।
সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের সঙ্গে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানের ৯০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। তবে প্রতিবেশী এই দুই দেশের সম্পর্ক বেশ জটিল অবস্থায় রয়েছে। পাকিস্তান প্রায়ই তেহরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নেতৃত্বাধীন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে। পাশাপাশি সৌদি আরবের সঙ্গেও সম্পর্ক সচল রাখার চেষ্টা করে। পাকিস্তানের বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে বাঁচাতে ঋণ পরিশোধে প্রায়ই ইসলামাবাদকে সহায়তা করছে রিয়াদ।
বর্তমানে দুই দেশের বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি ডলার। উভয় দেশের কর্মকর্তারা আগামী কয়েক বছরে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ১ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন