নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ::হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। নিহত রিমন মিয়ার ছোট ভাই রাজন আহমদ বিধু বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। ৫ জন সাংবাদিকসহ মোট ১৮৪ জনকে এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাতনামা প্রায় ৩ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
থানায় রেকর্ডকৃত মামলাটি নং ১৬, রুজু হয় গতকাল শুক্রবার (১৯ জুলাই) গভীর রাতে। মামলায় পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/৪২৭/৩০৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০২/৩৭৯/১১৪/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে ৭ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলার তিমিরপুর ও আনমনু গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন। সংঘর্ষে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে আরও তিনটি মামলা হয়েছে—একটি হত্যা মামলা, একটি পুলিশ অ্যাসল্ট এবং একটি হাসপাতালে ভাংচুরের অভিযোগে।
সর্বশেষ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা ও সাংবাদিক সেলিম তালুকদারের পারস্পরিক ফেসবুক পোস্ট থেকে শুরু হয় উত্তেজনা। একে অপরকে হেয় করে করা পোস্টের জেরে বাজার এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সময় স্থানীয়রা দু’জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এর প্রতিশোধে সেলিম তালুকদারের নেতৃত্বে তিমিরপুর, চরগাঁও ও আশপাশের গ্রামের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে নবীগঞ্জ নতুন বাজার এলাকায় হামলা চালায়।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, আনমনু গ্রামে হামলার উদ্দেশ্যে পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁও ও আশপাশের এলাকা থেকে একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ প্রায় ২৫০০-৩০০০ জনের একটি মিছিল আনমনু গ্রামে প্রবেশ করে। এ সময় ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণনাশী হামলার ঘটনা ঘটে।
মামলায় সাংবাদিক হিসেবে উল্লেখিত আসামিরা হলেন—দৈনিক মানবজমিন স্টাফ রিপোর্টার এম.এ. বাছিত, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমদ চৌধুরী, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আলা উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক সেলিম মিয়া তালুকদার এবং স্টাফ রিপোর্টার জাবেদ ইকবাল তালুকদার।
নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, “রিমন হত্যার ঘটনায় নতুন মামলায় ১৮৪ জনকে এজাহারনামীয় ও ৩০০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
স্থানীয়ভাবে মামলার আসামি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যাতে ২ প্রবাসীসহ কয়েকজনের নাম একাধিকবার ছিল বলে জানায় সূত্র। যাচাই-বাছাই শেষে ৭ জনের নাম বাদ দিয়ে মামলাটি চূড়ান্ত করা হয়।
এ ঘটনায় নবীগঞ্জে নতুন করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা