নিজস্ব প্রতিবেদক সুনামগঞ্জ ঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে নিউজ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে দৈনিক যায়যায়দিন এর সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা করেছে চোরাকারবারিরা। ছাতক থানার সামনে গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় ঘটনাটি ঘটেছে। আহত সাংবাদিককে বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে দ্রুত এই হামলাকারিদের গ্রেফতার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, গত মাসের ১৮ জুলাই ছাতকের লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানী এলাকায় ভারত থেকে চোরাই পথে দেশে আমদানি করা পণ্য ফুসকা ও রেডব্লু ভর্তি করা ট্রাক আটক করে সেনাবাহিনী। ছাতক ক্যাম্পের সেনাবাহিনী প্রায় ১৯ লাখ টাকা মূল্যের চোরাই মালামালসহ ট্রাকের সাথে ৩জন ব্যক্তিকে আটকের পর থানায় হস্তান্তর করে। এ তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা তাদের নিজ নিজ পত্রিকা ও পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করে। ঘটনার ১৩ দিনের মাথায় গত ৩১ জুলাই রাতে এই চোরাই মালামাল সেনাবাহিনীর মাধ্যমে আটক করানো হয়েছে মর্মে দৈনিক যায়যায় দিন'র ছাতক উপজেলা প্রতিনিধি সাজ্জাদ মাহমুদ মনির ও এশিয়ান টিভির ছাতক উপজেলা প্রতিনিধি নাজমুল হাসান জুয়েলকে দায়ী করে তাদেরকে মোবাইল ফোনে গালাগাল করে শাহিন মিয়া নামের টেঙ্গারগাঁও গ্রামের আফতাব মিয়ার ছেলে। সে এক পর্যায়ে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়। এ বিষয়ে সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনির চোরাকারবারি ও হুমকিদাতা শাহিন মিয়ার নাম উল্লেখ করে গত ১ আগস্ট ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি সেনাবাহিনী ছাতক ক্যাম্পেও চোরাকারবারি কর্তৃক হুমকির বিষয়টি মৌখিক ভাবে তারা অবহিত করেন।
এদিকে, চোরাকারবারি উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের টেংগারগাঁও গ্রামের আফতাব মিয়ার ছেলে শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে ছাতক থানায় অভিযোগ দায়ের ও এ বিষয়ে সংবাদ প্রচারের কারনে পৌরশহরের বাগবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা জবরু বক্সের ছেলে চোরাকারবারি শাওন আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত ৩ আগষ্ট সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরকে গালাগাল করে ওই শাওন। এই বিষয়টি তিনি পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেনসহ বেশ কয়েকজনকে অবহিত করেন।
এদিকে, গত শনিবার রাত ৮টার দিকে ছাতক থানায় অবস্থান করছিলেন সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনির ও দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার ছাতক প্রতিনিধি প্রভাষক মোশাররফ হোসেন। এসময় দক্ষিন বাগবাড়ির তুহিন ও স্মরণ এবং টেঙ্গারগাঁও এর মান্না ফোন পেয়ে দুই সাংবাদিক থানার সামনের ফার্মেসী ও সেলুনের কাছে দাড়িয়ে তাদের সাথে আলাপ করছেন এবং চা পান করা অবস্থায় হঠাৎ মোটর সাইকেল যোগে এসে কাঠের রুল দিয়ে সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরের ওপর আঘাত করে তাকে মাটিতে ফেলে চলে যায়। গাজিপুরের সাংবাদিক তুহিনকে যারা হত্যা করেছিল ঠিক একই কায়দায় এই মনিরকেও তারা প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিল বলে ধারণা স্থানীয়দের। পরে সহকর্মীরা তাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এই ব্যাপারে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মোখলেছুর রহমান আকন্দ বলেন, হামলার খবর শুনে আমি পুলিশ পাটিয়েছি।
লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।
মন্তব্য করুন